রোবট ব্যবহারের অসুবিধা গুলো কি কি - রোবট দিয়ে কি কি সমস্যা সমাধান করা যায়

রোবট শব্দটির উৎপত্তি চেক শব্দ 'রোবোটা' থেকে, যার অর্থ ফোরসড লেবার বা মানুষের দাসত্ব কিংবা একঘেয়েমি খাটুনি বা পরিশ্রম করতে পারে এমন যন্ত্র। রোবট হলো কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা, যা মানুষ যেভাবে কাজ করে ঠিক সেই ভাবেই কাজ করতে পারে অথবা এর কাজের ধরন দেখে মনে হবে এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আছে। 

রোবট-ব্যবহারের-অসুবিধাগুলো-কি-কি-রোবট-দিয়ে-কি-কি-সমস্যা-সমাধান-করা-যায়

রোবট, যেকোনো স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালিত মেশিন যা মানুষের প্রচেষ্টাকে প্রতিস্থাপন করে, যদিও এটি চেহারায় মানুষের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নাও হতে পারে বা মানবসদৃশ পদ্ধতিতে কার্য সম্পাদন করতে পারে না। বর্ধিতভাবে, রোবোটিক্স হল ইঞ্জিনিয়ারিং শৃঙ্খলা যা রোবটের নকশা, নির্মাণ এবং পরিচালনার সাথে কাজ করে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ রোবট ব্যবহারের অসুবিধা গুলো কি কি

রোবট ব্যবহারের অসুবিধা গুলো কি কি সেইগুলো জানতে হলে পুরো পোস্টটি ভালো ভাবে পড়ার জন্য অনুরোধ করছি। আমি এই চ্যাপ্টারে অসুবিধাগুলো নিয়ে আলোচনা করবো কিন্তু এই অসুবিধাগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে হলে আপনাকে রোবট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে যার জন্য এই পোস্টটি পুরোটাই পড়ার জন্য অনুরোধ করছি। এতে করে আপনি রোবট সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ও পরিপূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবেন আশা করছি। 

আরও পড়ুনঃ কিভাবে ঘরে বসেই মেয়েরা ইনকাম করবে

রোবট এমন একটি যান্ত্রিক মেশিন যাকে আমরা যেই ভাবে ব্যবহার করবো সেই ভাবেই ব্যবহার করা যাবে। তাকে আমরা যেই কাজে রাখবো সেই কাজটাই করে দিবে। যার কারণে এই রোবটকে দিয়ে আমরা অনায়াসে বৈধ এবং অবৈধ সব ধরনের কাজই সম্পূর্ণ করে নিতে পারবো। আর এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো, রোবট এর কোন নিজেস্ব কোন অনুভূতি বা জ্ঞান নাই। তাকে যেই প্রোগ্রাম দেওয়া হবে এবং যতটুকু পরিমাণে দেওয়া হবে রোবট ওইটুকুই শুধু করবে। হোক সেইটা ভালো বা খারাপ। 

রোবটকে সব কিছু চিনাই দিতে হয়। আর এইসব করার জন্য ওই রোবট যে আবিষ্কার করবে তাকেই সব কিছু দেখাশুনা করতে হয়। তার এইসকল কন্ট্রোল তার কাছেই থাকে। তাই বলা হয়ে থাকে একটা রোবটের কার্যকারিতা কেমন হবে তা নির্ভর করে যে ওই রোবট তৈরি করে তার মানসিকতার ওপর। এর এই জন্যই রোবটের প্রচুর উপকারিতা পাওয়া যায় আর সেই তুলানায় উপকারিতাও। আমরা যদি খারাপ কমান্ড দিয়ে তাকে তৈরি করি তাহলে সে খারাপ কাজ করবে আবার ভালো কমান্ড দিলে ভালো কাজ করবে। যার ফলেই বলা হয়ে থাকে মানুষের বহিঃপ্রকাশ হলো রোবট।

একটি রোবট যেমন আমাদের সহযোগিতা করছে তেমনি এটি হয়তোবা এক সময় আমাদের বিপদেরও কারণ হতে পারে। হয়তোবা আমরা নিজেই নিজেদের ক্ষতি ডেকে নিয়ে আসছি। এমন অনেক ঘটনার কথা শোনা যায় যেখানে রোবটের কারণে অনেককে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকিতেও পড়তে হয়েছে। যেমন- অনেক সময় রোবটে অনেক গ্লিচ দেখা দেয় যার ফলে এমনটা হয়। আবার যেই রোবটগুলো কোন খারাপ ব্যক্তি দ্বারা তৈরি হয় সেই রোবটগুলোর উদ্দেশ্য বা কার্যক্রমও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। 

তাছাড়া, অনেকে মনে করে যে ভবিষ্যৎ-এ এই রোবট হয়তোবা মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করবার চেষ্টা করবে এবং হয়তোবা তারা সফলও হয়ে যেতে পারে। ২০১৭ সালে বর্তমান বিশ্বের সব থেকে ধনি ব্যক্তি ইলন মাস্ক ঠিক এইরকম একটি কথাই বলেছিল। তিনি সরকার দ্বারা অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে তার বক্তব্য বলেন যে, “বর্তমান প্রযুক্তির সময়ে সবচেয়ে ভয়ের জিনিস হচ্ছে রোবট বা এ.আই যা মানবজাতির ধ্বংসের কারণ হতে পারে।

রোবট কি

রোবট বাস্তব জগৎ -এর সাথে সেনসর এবং অ্যাকচুয়েটরের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করে। অর্থাৎ একটি পরিবেশকে অনুভব করার ক্ষমতা আছে রোবটের। রোবটের কাজ করার পিছনে মূলত প্রোগ্রামিংয়ের ভুমিকা রয়েছে। অর্থাৎ একটি রোবট প্রোগ্রামেবল বা একটি রোবট সেই ভাবেই কাজ করবে যেভাবে তাকে প্রোগ্রাম করা হবে। রোবট মূলত স্বায়ত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত হয়ে থাকে। যার ফলে পরিবেশের বস্তু নিয়ে কাজ করতে পারে। তাকে যদি প্রোগ্রাম দেওয়া থাকে তবে দেখা যাবে সে স্বেচ্ছায় কাজ করে যাচ্ছে তার মতো করে। 

আবার যদি কেউ কমান্ড করে তাহলেও সেই কমান্ড অনুসারে কাজ করে থাকে। ধরে নিন আপনি একটি রেস্টুরেন্টে গেছেন সেখানে রোবট দিয়ে কাজ সম্পাদন করে থাকে। আপনি যাওয়ার পরে আপনার কাছে সেই রোবট আসবে আপনাকে জিঙ্গেস করবে আপনি কি খাবেন আপনি বললে সেই অর্ডারটা নিয়ে চলে যাবে এবং সম্পূর্ণ হলে আবার আপনার কাছে পৌছে দিবে। এটাই সাধারণত রোবট। তাকে ওইভাবেই সেটাপ করা থাকে। তাকে চালানোর জন্য কোন মানুষের প্রয়োজন হয়না। 

রোবট কিভাবে কাজ করে

রোবট কিভাবে কাজ করে সেই সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের এই রোবট সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত ভাবে জানতে হবে। আশা করবো আপনি এই পোস্টের শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ পড়বেন। রোবট সাধারণত একটি আয়রণ মেশিন যাকে একটি মানুষের আদলে তৈরি করা হয়ে থাকে এবং এই রোবটকে পরিচালনার জন্য প্রোগ্রামিং এর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রোগ্রামিংক ছাড়া রোবটকে কন্ট্রোল করা সম্ভব নয়।  তাই তাকে এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভা ইত্যাদি প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করে রোবটকে সেটাপ করা হয়ে থাকে। 

রোবট-কিভাবে-কাজ-করে

একটি রোবট পরিচালনার জন্য কি কি প্রয়োজন হয়ে থাকে বা কি কি থাকে চলুন তা জানি-
  • হার্ডওয়্যার
  • সফটওয়্যার 
  • এ.আই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স)
  • পাইথন
  • জাভা
  • বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষা 
  • সি++ সহ আরও অনেক কিছু। 

রোবট কত ধরনের হয়ে থাকে

রোবট কত ধরনের হয়ে থাকে তার বিস্তারিত আলোচনা করতে গেলে হয়তো শেষ করা যাবেনা। কারণ বর্তমানে অনেক ধরনের রোবট এর উৎপত্তি ঘটেছে যা সবগুলোই উপস্থাপন করা অসম্ভব। তবে এটি একটি আপেক্ষিক বিষয়। এখানে রোবটের কয়েকটি ধরন নিয়ে আলোচনা করা হলো যদিও এর বাহিরেও আরো অনেক ধরনের রোবট হতে পারে।

হিউম্যানয়েডস রোবটঃ রোবটের নাম শুনলেই প্রথমেই আমাদের মনে রোবটের যেই চিত্রটি ফুটে উঠে, এটি সেই ধরনের রোবট। হিউম্যানয়েডস রোবট হচ্ছে এমন এক ধরনের রোবট যা দেখতে অবিকল মানুষের মতো হয়ে থাকে অথবা অনেকটা মানুষের মতো হয়ে থাকে। যেমন- রোবট সোফিয়া একটি হিউম্যানয়েডস রোবট।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবটঃ শিল্প-কারখানায় যেই রোবটগুলো মানুষের পাশাপাশি কাজ করে থাকে সেইগুলোকে সাধারণত ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট বলা হয়ে থাকে। এই রোবটগুলো মূলত পুনরাবৃত্তিমূলক কাজগুলো করে থাকে।

হেলথ কেয়ার রোবটঃ যেই রোবটগুলো স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় তাদেরকে হেলথ কেয়ার রোবট বলা হয়। রোগীর অপারেশন, স্বাস্থ্য-অবস্থা পরিচর্যা করা, জীবাণুমুক্তকরণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্বাস্থ্যমূলক কাজে এই হেলথ কেয়ার রোবট ব্যবহৃত হয়।

ড্রনঃ একে মনুষ্যবিহীন আকাশযানও বলা হয়। ড্রোন বিভিন্ন আকারে আসে এবং স্বায়ত্তশাসনের বিভিন্ন স্তর রয়েছে। উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে, ডিজেআই-এর জনপ্রিয় ফ্যান্টম সিরিজ এবং প্যারটস আনাফি, সেইসাথে গ্লোবাল হকের মতো সামরিক ব্যবস্থা, যা দীর্ঘমেয়াদী নজরদারির জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে মজার কথা হচ্ছে যে অনেকে হয়তোবা জানেই না যে ড্রোন আসলে এক প্রকার রোবট।

মিলিটারি এবং সিকিউরিটি রোবটঃ আর্মিদের বিভিন্ন কাজে এই বিভাগের রোবটগুলো কাজ করে থাকে। যেমন- প্যাকবোট রোবটটি ইরাক এবং আফগানিস্তানকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। তেমনই ভাবে রোবট বিগ ডগ ব্যবহার করা হয় আর্মিদের ভারি জিনিসপত্র বহন করার জন্য তাছাড়াও সিকিউরিটির জন্যেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে বিভিন্ন রোবট, যেমন- কোবাল্ট। 


রিসার্চ রোবটঃ এই রোবটগুলোর জন্ম সাধারণত কোন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে বা কোন এক গবেষণাগারে হয়ে থাকে। এই রোবট গুলোর মূল কাজ হচ্ছে গবেষকদের গবেষণা করতে সাহায্য করা।

সেলফ ড্রাইভিং কার রোবটঃ টেসলা গাড়ির মতো যেই গাড়িগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলতে পারে, সেইগুোকেই সেলফ ড্রাইভিং রোবট বলা হয়ে থাকে।

আন্ডার ওয়াটার রোবটঃ এই রোবটগুলো প্রিয় স্থান হচ্ছে পানি। এই রোবটগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যাকোয়ানট -এর মতো গভীর সমুদ্রের সাবমার্সিবল, ওশান ওয়ানের মতো ডাইভিং হিউম্যানয়েড এবং এসিএম-আর৫এইচ  স্ন্যাকেবট এর মতো জৈব-অনুপ্রাণিত সিস্টেম।

রোবট এবং কম্পিউটারের মধ্যে পার্থক্য

রোবটের কাজ হচ্ছে একটি গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এক সাথে করে একটি গাড়ি তৈরিতে সহযোগিতা করা। তবে একটি কম্পিউটার শুধু সেই কাজকে মনিটর করতে পারবে। বাস্তব জগৎ এ কোন পরিবর্তন কম্পিউটারের পক্ষে করা সম্ভব না। এটাই প্রধানত এদের পার্থক্য। একটি কম্পিউটার দ্বারা সকল কিছু দিক নির্দেশনা দেওয়া যায় এবং যাবতীয় কার্যপ্রণালি দেখাশুনা করা হয়ে থাকে। সেই সাথে সকল হিসাব-নিকাশ সহ সকল প্রোগ্রামিং এর কাজও করে থাকে এই কম্পিউটার। এছাড়াও সকল ডিজাইন করার ক্ষেত্রেও এই কম্পিউটার কাজ করে থাকে। 

কিন্তু রোবট এইসব কিছুই করেনা সে শুধু কমান্ড ফলো করে। যদিও বা কম্পিউটারকেও কোন ব্যক্তি কমান্ড দিলেই তবে সে কাজ করে অন্য দিকে রোবটকে কমান্ড দিয়ে রাখা হয় যার ফলে তাকে চালানোর জন্য আর কোন ব্যক্তির প্রয়োজন হয়না। আর এইসব কাজ রোবটকে দিয়ে করানোর জন্য একটি কম্পিউটারের প্রয়োজন হয়। রোবট নিজেও যদিও একটি কম্পিউটারের ন্যায় কাজ করে থাকে। তবে এদের পার্থক্য শুধু এদের কর্মে।   

রোবট সম্পর্কে কিছু মজাদার তথ্য

রোবট শব্দটি এসেছে Czech শব্দ ‘Robota’ থেকে। যার মানে হচ্ছে ‘কঠিন কাজ’ বা ‘জোরপূর্বক শ্রমীক’। জর্জ ডেভল প্রথম ডিজিটাল চালিত রোবট আবিষ্কার করেন। রোবট সেটাই করে যা তাকে তার প্রোগ্রামে বলে দেওয়া হয়। সাধারণত যেই রোবটগুলো দেখতে মানুষের মত হয় তাদেরকে এ্যান্ড্রোয়েড বলা হয়। ১৯৪২ সালে ইসাক আসিমভ রোবটের তিনটি আইন আবিষ্কার করেন। জন মক্কার্থী ১৯৫৬ সালে এ.আই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আবিষ্কার করেন। 

গবেষকরা অনুমান করেছেন যে ২০৪০ সালের মধ্যে রোবটগুলি মানুষের মতো স্মার্ট হয়ে উঠতে পারে। ১৯৯৬ সালে শাকের নামে একটি রোবট এ.আই এর সাহায্যে নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্বের প্রথম রোবট হয়ে ওঠে। অন্যদিকে ২০২৫ সালের মধ্যে, জাপানে ১ মিলিয়ন এর মতো শিল্প রোবট থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, ২০৫০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে মানব-রোবটের বিয়ে বৈধ হবে।

রোবট কি মানুষের মতো ভয় পেতে পারে

রোবট কি মানুষের মতো ভয় পেতে পারে? রোবট আসলে একটি যান্ত্রিক মেশিন যা আমাদের দেখানো অনুসারেই চলবে। তার ভেতরে যদি আপনি ভয় নামক সেন্সর ইনপুট দিতে পারেন আর অনুভূতি সৃষ্টি  করতে পারেন তাহলে অবশ্যই রোবটও ভয় পাবে। তবে মানুষের থেকে তাদের ভয়টা একটু ভিন্ন রকম হতে পারে। যেহেতু তারা যান্ত্রিক তাই অনুভূতিটাও যান্ত্রিকের মতোই হবে সম্পূর্ণটাই মানুষের কপি হবেনা। রোবট শব্দ শুনলেই আমাদের মনের মাঝে রোবোকপ বা সোফিয়ার চেহারাটাই চোখে ভেসে উঠে। 

রোবট একটি যান্ত্রিক যন্ত্র, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। কিন্তু রোবট শব্দটিকে এত সহজেই বিশ্লেষণ করা যায় না। মূলত রোবট হচ্ছে একটি মেশিন যা মানুষের দ্বারা প্রেরণ করা নির্দেশ পালন করে। একটি রোবটকে মানুষ এমন ভাবে প্রোগ্রাম করে থাকে যেন এটি মানুষের জটিল কাজগুলোকে খুব সহজেই, স্বল্প সময়ে এবং নিপুণভাবে সম্পন্ন করতে পারে। রোবটকে তৈরি করা হয় মূলত জটিল কাজকে অনেক সহজে বা নিজে নিজে যেন করতে পারে সেই ক্ষেত্রে।

একজন দক্ষ প্রোগ্রামার একটি রোবটকে এমন ভাবে প্রোগ্রাম করে থাকে যেন এটি জটিল পরিবেশেও কাজ করে যেতে পারে। একটি রোবট স্বয়ংক্রিয়ভাবেও কাজ করতে পারে আবার এটিকে রিমোটের মাধ্যমেও নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। রোবট মানুষের ন্যায়ও দেখতে হতে পারে আবার একটি অন্য যেকোন আকৃতির হতে পারে। এক কথাই বলতে গেলে, রোবট হচ্ছে এমন একটি যন্ত্র যেটি মানুষের কাছ থেকে এক বা একাধিক তথ্য ইনপুট নিয়ে সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে কোন একটি আউটপুট দিবে।একটি রোবটের কিছু নির্দিষ্ট গুণ আছে। রোবট কি সেটা আমরা সবাই জানি বা ইতি মধ্যে জেনে গেছি। 

হার্ডওয়্যার, সেনসর, প্রসেসর ও এ.আই আসলে কি এবং কি ভাবে কাজ করে থাকে

হার্ডওয়্যার হচ্ছে রোবটের সেই অংশ যার মাধ্যমে একটি রোবট বাস্তব জগৎ -এর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। একটি রোবটের হার্ডওয়্যার পার্টের মধ্যে রয়েছে মটরস, সেনসর, পাওয়ার সাপ্লাই, কন্ট্রোলার, ইন্ড ইফেক্টরস এবং আরও অনেক কিছু। এই সবকিছু মিলেই একটি রোবটের ফিজিকাল অংশটি তৈরি হয়। যেমন একটি মটর-এর কাজ হচ্ছে রোবটের বিভিন্ন অংশ যেন তার অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে তা নিশ্চিত করা। তেমনি একটি সেনসর-এর কাজ হচ্ছে চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা। 

পাওয়ার সাপ্লাইয়ারের কাজ হচ্ছে প্রয়োজনীয় পাওয়ার সাপ্লাই করা, প্রসেসরের কাজ হচ্ছে তথ্য বিশ্লেষণ করা এবং এমন অনেক হার্ডওয়্যার একত্রে একটি রোবটের সম্পূর্ণ ফিজিকাল স্ট্রাকচার তৈরি করে। সফটওয়্যার অনেকটা ব্রিজের মতো কাজ করে। এর মূল কাজ হচ্ছে রোবটের ব্রেইন (এ.আই) এবং দেহের (হার্ডওয়্যার) মাঝে সংযোগ স্থাপন করা। 

একটি রোবটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। এটি হচ্ছে রোবটের ব্রেইন, যার মাধ্যমে একটি রোবট তাকে দেওয়া নির্দেশ বা তথ্যকে বিশ্লেষণ করে কোন একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে বা কোন কাজ করতে পারে। এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সাধারণত কোন এক প্রোগ্রামার বা ডেভেলপার ডেভেলাপ করে থাকে। একটি রোবটের এ.আই যতটাই শক্তিশালী এবং কার্যকরী হবে সেই রোবটটিও ততোটাই কার্যকারী ও শক্তিশালী হবে।

রোবট বা রোবটিক্স আইন

মানুষের যেমন আইন মেনে চলতে হয় তেমনই ভাবে একটি রোবটকেও কিছু নির্দিষ্ট আইন বা নিয়ম মেনে চলতে হয়। এই ক্ষেত্রে রোবটের জন্য তিননি আইন ধার্য করা আছে। প্রত্যকটি রোবটকে এই আইন মেনে চলতে হবে। রোবটিক্সের এই তিনটি আইনকে আসিমভস লাওস বলা হয়ে থাকে যা তৈরি করেছেন ইসাক আসিমভ এবং এই তিনটি আইন রোবটের পাশাপাশি যারা রোবট বা রোবটিক্স নিয়ে কাজ করে তাদেরও মেনে চলতে হবে। যেনো তাদের তৈরি রোবট আইন তিনটি মেনে চলে। এই রোবট বা রোবটিক্সের আইন তিনটি হচ্ছে-

রোবট-বা-রোবটিক্স-আইন

১. রোবটিক্সের প্রথম আইনঃ একটি রোবট কোনও মানুষকে আঘাত করতে পারে না বা নিষ্ক্রিয়তার মাধ্যমে কোনও মানুষকে ক্ষতি করতে দেয় না।

২. রোবটিক্সের দ্বিতীয় আইনঃ একটি রোবটকে অবশ্যই মানুষের দ্বারা প্রদত্ত আদেশ মানতে হবে, যেখানে এই ধরনের আদেশ প্রথম আইনের সাথে সাংঘর্ষিক হবে।

৩. রোবটিক্সের তৃতীয় আইনঃ একটি রোবটকে অবশ্যই তার নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করতে হবে, যতক্ষণ না এই ধরনের সুরক্ষা প্রথম বা দ্বিতীয় আইনের সাথে সাংঘর্ষিক না হয়। একটি রোবট তার চারপাশের পরিবেশকে নেভিগেট করতে সক্ষম, অপরদিকে কম্পিউটারের পক্ষে তা করা সম্ভব না। যেমন ধরুন- একটি গাড়ি তৈরির কারখানায় রোবট এবং কম্পিউটার দু’টিরই প্রয়োজন হয়।

মন্তব্য

পরিশেষে বলা যায়, আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে রোবট ব্যবহারের অসুবিধা গুলো কি কি - রোবট দিয়ে কি কি সমস্যা সমাধান করা যায় এই সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি যার মাধ্যমে আশা করি রোবট সম্পর্কে সকল ভুল বা অসম্পূর্ণ ধারণা আপনার পরিষ্কার হয়ে যাবে এবং অনেক কিছু শিখতে ও জানতে পারবেন। আজকের এই পোস্টটি অনেক তথ্যবহুল ও প্রয়োজনীয় একটি পোস্ট যা বর্তমান বিশ্বে এখন শীর্ষ স্থানীয় জায়গা দখল করে নিয়ে আছে ্এই রোবট। 

আরও পড়ুনঃ ইসলামি ব্যাংক ফাউন্ডেশনে বিশাল নিয়োগ-জেনে নিন আবেদন প্রক্রিয়া

আমার এই পোস্টের মধ্যে কোন প্রকার ভুল তথ্য বা কোন অসামঞ্জস্যতা থাকলে তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন যেনো আমি ভুলগুলো সংশোধন করে নিতে পারি। এছাড়াও কোন আদেশ বা উপদেশ থাকলে সেটাও আশা করি কমেন্ট এর মাধ্যমে একটি গঠনমূলক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করবেন। কষ্ট করে এতোবড় পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সকলের সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই সমাপ্তি করছি। দেখা হবে অন্য কোন ব্লগ পোস্টে ভালো থাকবেন সবাই আসসালামু আলাইকুম। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ABM Creative IT'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url