রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসা
রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসার আগে জেনে রাখি এই রক্ত আমাশয় একটি জটিল রোগ যা থেকে অনেক বড় ঝুঁকির সম্ভাবনাও রয়েছে। কারো যদি রক্ত আমাশয় হয় তাহলে সেইটাকে অতি গুরুত্বের সাথে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।
সাধারণত এই সমস্যাটি প্রধানত শীতকালে অতিরিক্ত শীত বা গরমকালে অতিরিক্ত ঘেমে সেই ঘাম শরীরে বসে যাওয়ার কারণেও হতে পারে। সাধারণত এইটা বেশি লক্ষ্য করা যায় বর্ষাকাল ও শীতকালে। এই সময়টাতেই বেশি রক্ত আমাশয়ের লক্ষ্যণ দেখা যায়।
এই পোস্টের মধ্যে যেইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তার সূচিপত্র
- রক্ত আমাশয় আসলে কি
- রক্ত আমাশয়ের কারণ বা কেনো হয়
- রক্ত আমাশয়ের লক্ষ্যণ সমূহ
- রক্ত আমাশয়ের প্রাথমিক চিকিৎসা
- রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসা
- রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসার কিছু উপায়
- রক্ত আমাশয়ের জটিলতা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি
- রক্ত আমাশয় শরীরের উপর কি রকম ঝুঁকি বা প্রভাব ফেলতে পারে
- রক্ত আমাশয় থেকে বাঁচার উপায় বা প্রতিকার
- রক্ত আমাশয়ে সতর্কতা অবলম্বন
- মন্তব্য বা শেষ কথা
আরও পড়ুনঃ থানকুনি গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা
রক্ত আমাশয় আসলে কি
অতি সাধারণভাবে বলতে গেলে আমাদের যখন পায়খানা গেলে পায়খানার সাথে সাদা সাদা এক
প্রকারের গাড়ো পদার্থ বের হয় তাকেই বুঝে থাকি। আর এই আমাশয়ের মাত্রা যখন অতিরিক্ত
আকারে বৃদ্ধি পায় তখন এই পায়খানার সাথে তাজা রক্ত বের হয়ে আসে। কারো কারো
ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই এই রক্ত বের হয়ে আসে। বার বার টয়লেটে যাওয়া লাগে এবং গেলেই
হালকা পায়খানার সাথে রক্ত বের হয়ে আসে আবার কোন কোন ক্ষেত্রে শুধু রক্তই বের হয়ে
আসে। যা দেখে রুগী আরো বেশি দূর্বল হয়ে পড়ে।
এই রক্ত আমাশয় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গ্রামের লোকজনদের মাঝে বেশি দেখা যায়। গ্রামের
খোলামেলা আবোহাওয়া সেই সাথে অসতর্কতামূলক চলাফেরার কারণেই এই রোগটা হয়ে থাকে।
পায়খানার সাথে রক্ত বের হয়ে আসাটাকে অনেকেই স্বাভাবিক ভাবে দেখেন আবার অনেক
গুরুতর ভবে দেখে থাকেন। তবে এই রক্ত আমাশয় অনেক বড় একটি সমস্যা যা থেকে একজন
মানুষ রক্তশূন্যতা হয়ে মৃত্যু পর্যন্তও হতে পারে। এই আমাশয়কে মেডিকেল বিজ্ঞান
ডায়রিয়া বলেও আখ্যায়িত করেছেন।
রক্ত আমাশয়ের কারণ বা কেনো হয়
এই রক্ত আমাশয় প্রধানত ব্যাকটেরিয়া এবং খাবারের সমস্যার জন্য হয়ে থাকে। এমনকি
দূষিত পানির জন্যেও হয়ে থাকে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় অতিরিক্ত ঠান্ডা
বা অতিরিক্ত শীতের কারণেও হয়ে থাকে। তবে এই রোগের বেশির ভাগই লক্ষ্য করা যায়
বর্ষাকালে। সাধরণ এই সময়টাই অতি বৃষ্টির ফলে নোংরা ও দূষিত পানি চারিদিকে ছড়িয়ে
পড়ে। ভালো পানির সাথে মিশে গিয়ে ওই পানিকেও নষ্ট করে ফেলে। আর এইটার ফলে এই পানি
থেকে বিভিন্ন ভাবে এই পানি দ্বারা সংক্রমিত হয়ে মানুষজন রক্ত আমাশয়ে আক্রান্ত
হচ্ছে।
অন্যভাবে যদি বলি তাহলে বলা যায়, রক্ত আমাশয়ের মূল যেই কারণ তা আমাদের অসচেতনতাকে
বা অসাবধানতাকেই ধরা যায়। আমরা যদি প্রত্যেকটা বিষয়ে সচেতন থাকি তাহলেই এই রক্ত
আমাশয় থেকে ধূরে থাকতে পারি। আমাদের একটু অসতর্কতার কারণেই আমাদের এই রোগের
সম্মুখীন হতে পারি। আর আমাশয় হলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে তাছাড়া এই আমাশয়ই একসময়
অতিরিক্ত মাত্রা ধারণ করে জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।
রক্ত আমাশয়ের লক্ষ্যণ সমূহ
রক্ত আমাশয়ে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের উপস্বর্গ দেখা দিতে পারে। একি উপস্বর্গ সকলের
ক্ষেত্রে একই হবে বিষয়টা এমন না। কারো বমি দিয়ে শুরু হতে পারে আবার পায়খানা
অতিরিক্ত মাত্রায় যেটাকে ডায়রিয়া বলে থাকি সেই ভাবেও দেখা দিতে পারে আবার কারো
সরাসরি রক্ত পায়খানা আকারেও দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত বমি বা ডায়রিয়ার ফলে আবার
অনেক সময় পানি শূন্যতাও দেখা দিতে পারে যার কারণে ওই ব্যক্তির আরো অনেক রকম
সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিম্নে এইসব লক্ষ্যণগুলো উল্লেখ করা হলো।
- পেট কামড়ানো বা মোঁচড় দেওয়া
- পেট ফুলে উঠতে পারে সাথে ব্যাথা ও শক্ত হয়ে যাওয়া
- রক্ত পায়খানা বা পায়খানার সাথে অতিরিক্ত রক্ত বের হয়ে আসা
- বমি হতে পারে আবার অনেক সময় বমি না হয়েও বমি বমি ভাবে হতে পারে
- পানি শূন্যতার কারণে প্রস্রাব কম হওয়া
- ঘন ঘন পায়খানাতে যাওয়া
- মুখ ফেকাশে হয়ে যায় সাথে ত্বক উষ্ণ হয়ে আসে
- অতিরিক্ত তৃষ্ণা পায় সাথে শরীরের ওজন কমে যায়
- জ্বর-সর্দি হয় যার ফলে পুরো শরীর ব্যাথ্যা করে এবং খিচুঁনি হয়
- শরীরের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং চলাফেরাতেও সমস্যা হয়
রক্ত আমাশয়ের প্রাথমিক চিকিৎসা
রক্ত আমাশয় হলে সর্বপ্রথম রুগীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। আর তার জন্য প্রথম
অবস্থাতেই রুগীর উচিত বিষয়টি পরিবার বা আশেপাশের কাউকে জানানো অথবা নিজেই এর
প্রতিকারের চেষ্টা করতে হবে। প্রাথমিক অবস্থাতে বেশি পরিমাণ পায়খানা বা বমি হলে
সেলাইনের পানি পান করতে হবে যেনো পানি শূন্যতা না দেখা দেয়। প্রথম অবস্থাতে
রক্ত খুব বেশি যায়না। সমস্যার আকার প্রকট হতে থাকলে তার সাথে সাথে এই রক্তের
পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
যতটা সম্ভব শরীরকে ফিট রাখার চেষ্টা করতে হবে এবং কোন প্রকার খাবার ওই মূহুর্তে
খাওয়া যাবেনা। এতে করে সমস্যা আরো বেশি হতে পারে সেই সাথে পেটের খিচুঁনিও হতে
পারে। কোন ভাবেই ভীতি স্বীকার করা যাবেনা এবং স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করতে হবে।
নিজেকে ওই সময় অন্য কাজের মধ্যে না রাখাই ভালো অনেক সময় মাথায় চক্কর দিয়ে উঠতে
পারে। এই রকম হলে মাটিতে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকতে পারে যা অনেক সময় বিপদের
কারণ হিসেবে দাঁড়ায়।
রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসা
রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসার অন্যতম প্রধান ঔষুধ হলো ভেষজ ঔষুধ। বিভিন্ন এলাকায়
বিভিন্ন রকম ভেষজ গাছ ব্যবহার করে থাকে। আর এইসব ভেষজ গাছ বা উদ্ভিদ বিভিন্ন
নামের হয়ে থাকে। আজকে যেই ভেষজ ঔষুধ বা গাছের কথা বলবো তা হলো বেত গাছ। এই বেত
গাছের মূল বা স্বাস খেলে পুরনো আমাশয় থেকে শুরু করে নতুন আমাশয়ও ভালো হয়ে যায়।
অনেক ক্ষেত্রে এই বেতের ফলও ভালো কাজ করে এই রোগের ক্ষেত্রে।
রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসার ক্ষেত্রে এইসব টোটকা অনেক কার্য করী হিসেবে ভূমিকা
রাখে। তবে যদি কোন ভাবেই এইসব ঘরোয়া চিকিৎসায় কোন প্রকার সুস্থ্যতার দেখা পাওয়া
না যায় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়া জীবন
মারাত্মক ঝুঁকির সম্মুখিন হতে পারে। যা মৃত্যুরও কারণ হতে পারে। তাই সমস্যা যদি
বিকট আকার ধারণ করে তাহলে যত দ্রুত সম্ভব মেডিকেলে নিয়ে যেতে হবে এবং ডাক্তারের
পরামর্শ মোতাবেক চিকিৎসা নিতে হবে।
রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসার কিছু উপায়
বাসায় থেকে যেই চিকিৎসা নেওয়া হয় সেইটাকেই মূলত ঘরোয়া চিকিৎসা বলা হয়। এই ঘরোয়া
চিকিৎসার জন্য কোন ডাক্তারের কাছে বা মেডিকেলে যাওয়ার প্রয়োজন হয়না। এই ঘরোয়া
চিকিৎসার ক্ষেত্রে এমন অনেক চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে যেইগুলো বাসায় থেকেই করা যায়
এতে করে অনেক সময় রোগ উপশম হয়ে যায়। নিম্নে সেইরকম কিছু উপায় তুলে ধরা হলো-
- আদা ও মধুঃ এক চামচ মধুর সাথে এক থেকে দুই চামচ আদার রস মিশিয়ে খেলে পেটের সমস্যা কমার সম্ভাবনা থাকে। কারণ আদাতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণাগুণ। যা পাকস্থলির হজম প্রক্রিয়াকে আরো সহজ করতে সাহায্য করে থাকে।
- ডাবের পানিঃ ডাবের পানি শরীরকে পানিশূন্যতার হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং সেই সাথে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে যা রক্ত আমাশয়ে অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই ডাবের পানিতে অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণও আছে যা এই পুরো প্রক্রিয়াকে সচল রাখে।
- সেলাইন পানি/পানি পানঃ রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসায় সেলাইন পানি বা সাধারণ পানি অতি মাত্রায় পান করতেই থাকতে হবে। এতে করে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং শরীরের ক্ষতিকারক টক্সিন বের করতে সহায়তা করে থাকে।
- হালকা ভাত/ভাতের মাড়ি/খিচুঁড়িঃ রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসায় শরীরকে ঠিক এবং সচল রাখতে হালকা বা পাতলা জাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন। অতি মাত্রায় খাওয়া যাবেনা পরিমাণ মতো সীমিত আকারে খেতে হবে। যমন- ভাতের মাড়ি, খিচুঁড়ি, সিদ্ধ করা আলু ইত্যাদি জাতীয় খাবার খেতে হবে যেনো পেটের উপরে কোন চাপ না পড়ে।
আরও পড়ুনঃ শীতের সকালে খেজুর রসের গুণাগুণ
পরিশেষে বলা যায় যে, নরম খাবার খাওয়াতে হবে সাথে পেটের হজম হয় এমন জাতীয়
খাবার খাওয়াতে হবে। রক্ত আমাশয়ের প্রধান করাণই হচ্ছে পেট তাই এই পেটকে
সুরক্ষিত ও সুস্থ্য রাখতে হবে। আর সেই জন্যেই আগে পেটকে বিপদ মুক্ত করার
জন্যই বেশি বেশি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি সমুদ্ধ খাবার
খাওয়েইতে হবে। এতে করে দ্রুত পেটের হজম বৃদ্ধি পাবে এবং পেটকে পরিষ্কার করে
রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসাকে সফল করে তুলবে।
রক্ত আমাশয়ের জটিলতা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি
রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসার সবচাইতে বড় জটিলতা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হলো
অতিরিক্ত রক্তপাত। যখন কোন রুগীর শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্ত বের হয়ে যায় মলদ্বার
দিয়ে রক্ত আমাশয়ের কারণে তখন শরীর অনেকটাই রক্তশূন্যতায় ভোগে। আবার অনেক সময়
পানি শূন্যতার ঘটনাও ঘটে। এইসব দিক যদি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ না করা যায় তাহলে
রুগীর অবস্থা আরো কঠিন এবং জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
আর এই জটিলতা থেকেই স্বাস্থ্য ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। কোন কারণে সঠিক সময় সঠিক
চিকিৎসা না দেওয়া হলো রুগীর মৃত্যুও পর্যন্ত ঘটতে পারে। যার ফলে এই রক্ত আমাশয়
হলে তৎক্ষণাত চিকিৎসা বা ব্যবস্থা নিতে হবে। এতে কারো এই রক্ত আমাশয়ের জটিলতা ও
স্বাস্থ্য ঝুঁকিও অনেকটাই হ্রাস পাবে। সেই সাথে চিকিৎসা ব্যবস্থাও আরো সহজ হয়ে
যায় এবং তাড়াতাড়ি রুগী সুস্থ্য হতে পারে।
রক্ত আমাশয় শরীরের উপর কি রকম ঝুঁকি বা প্রভাব ফেলতে পারে
রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসার ফলে যেমন তৎক্ষণাত ভালো করতে পারে তেমনি শরীরের
উপর বিভিন্ন ভাবে প্রভাবও ফেলতে পারে। রক্ত আমাশয় হলে প্রাথমিক পর্যয়ে এই রোগের
চিকিৎসা ঘরোয়া ভাবে করা যায় আর এতে করে দ্রুত সুস্থ্য হওয়ার আশঙ্কাই বেশি থাকে।
কিন্তু কোন কারণে যদি বেশি দেরি করে ফেলা হয় তাহলে সহজে ভালো হতে চাইবেনা তখন
ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে তারজন্য রেজিষ্টার্ড ডাক্তার বা মেডিকেলে
দেখানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে।
আর এই প্রক্রিয়াই যদি বেশি দেরি হয়ে যায় আর রুগীর অবস্থা যদি বেশি খারাপ হয়ে
যায় তাহলে অবশ্যই শরীরের উপর নানা রকম ভাবে সমস্যা তৈরি করবে যা শরীরের ঝুঁকি
বৃদ্ধি করে। বমি, রক্ত আমাশয়, খিচুঁনি, মাথা ঘোরা, শরীরের কার্যক্ষমতা হ্রাস,
খাইতে না পারা ইত্যাদি রকমের সমস্যা হতে পারে। যা মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি
বাঁড়ায়।
রক্ত আমাশয় থেকে বাঁচার উপায় বা প্রতিকার
রক্ত আমাশয় থেকে প্রাথমিকভাবে বাঁচতে হলে রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসা করা
প্রয়োজন। তবে রক্ত আমাশয় হয়ে গেলে তখন আর প্রতিরোধ করা যায় না তখন তার কাছে
আত্মসমর্পণ করে প্রতিকারের ব্যবস্থা করা লাগে। তাই এই আমাশয় বা রক্ত আমাশয় এর
হাত থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই অবশ্যই আমাদেরকে সাধারণ নির্দেশনাবলিগুলো মেনে চলতে
হবে যা ইতিমধ্যেই উপরে আলোচনা করা হয়েছে।
যার মধ্যে সবচাইতে বড় সমস্যা সৃষ্টিকারী একটি অঙ্গ হচ্ছে পেট বা পাকস্থলী।
এইখান থেকেই মূলত এই রক্ত আমাশয়ের সৃষ্টি হয়। তাই যতটা সম্ভব পরিষ্কার থাকতে
হবে এবং বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার রাখতে হবে সেই সাথে পানি ব্যবহারে সচেতন হতে
হবে। দূষিত পানি পান বা অন্যান্য কাজে ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে হবে। খাবারের
ক্ষেত্রে যথেষ্ট খেয়াল রাখতে হবে। কোন প্রকার বাসি খাবার, নোংরা খাবার খাওয়া
যাবে না। এতে করে এই শরীরের ঝুঁকি আরো বৃদ্ধি পাবে।
রক্ত আমাশয়ে সতর্কতা অবলম্বন
এই রক্ত আমাশয়ের সমস্যা খুব বেশিদিন ধরে যদি চলমান থাকে বা অতিরিক্ত তাপমাত্রায়
জ্বর, অতিরিক্ত খিচুঁনি, পেট ব্যথা, মাথা ব্যথা, মলদ্বার দিয়ে রক্ত বের হওয়ার
পরিমাণ বাড়তেই থাকে তাহলে তৎক্ষণাত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ এই
সমস্যা থেকে আরো বড় কোন সমস্যা হতে পারে তাই এই সমস্যা ডাক্তারের পরামর্শ
অনুযায়ী সমাধান করতে হবে।
উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো সাধারণ চিকিৎসার জন্য বা সম-সাময়িক আরাম পাওয়ার জন্য
কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। অনেক সময় পুরো সমস্যাকেও সমাধান করতে পারে। তাই এই
চিকিৎসাগুলো করার পরে কোন প্রকার আরাম না হলে তো অবশ্যই চিকিৎসকের
পরামর্শ নিতে হবেই এছাড়াও যদি দেরি হয় তাহলে মারাত্মক ধরনের স্বাসথ্য
ঝুঁকির সম্মুখিন হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ অ্যালোভেরা গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা
মন্তব্য বা শেষ কথা
পরিশেষে বলা যায় যে, এই রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমেই অনেকটা উপশম
হয়ে যায়। তবে সব ক্ষেত্রেই যে এই টোটকাগুলি কাজে লাগবে এমনটি নাও হতে পারে।
তাই প্রয়োজন অনুসারে ডাক্তারের পরামর্শও নিতে পারে। সবাইকে বলবো সাধারণ অবস্থায় এই রক্ত আমাশয়ের ঘরোয়া চিকিৎসা করতে
চাইলে করতে পারেন তবে অবস্থার উন্নতি না হয়ে অবনতি হচ্ছে এমনটা বুঝতে পারলে
ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন এবং সেই সাথেই প্রয়োজন অনুসারে মেডিকেলে ভর্তি করানো
যেতে পারেন।
আবারো বলি, আমার এই ব্লগ পোস্টের মধ্যে কোন প্রকার ভুলত্রুটি পরিলক্ষিত হলে
অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে আমাকে ভুলগুলা
সুধরিয়ে নেওয়ার সুযোগ করে দিবেন কমেন্ট এর মাধ্যমে। উপরোক্ত ঘরোয়া চিকিৎসা
মাত্র কেউ গুরুতর অবস্থাতে এই টোটকাগুলো কাজে না লাগিয়ে সময়টাকে কাজে লাগিয়ে
দ্রুত মেডিকেল চিকিৎসা শুরু করতে হবে। এছাড়াও এই চিকিৎসা করতে গিয়ে কারো কোন
সমস্যা হলে পোস্টদাতা কোন ভাবেই দায়ি থাকবে না। সকলের সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু
কামনা করছি, আসসালামু আলাইকুম।
ABM Creative IT'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url