শীতের সকালে খেজুর রসের গুণাগুণ

 

শীতের সকালে খেজুর রসের গুণাগুণ আমাদের দেহকে অনেক স্ট্যামিনার জোগায়। শীতের সকাল মানেই যেনো অদ্ভুত এক আলসামি। আরামদায়ক বিছানা বা কাথার উষ্ণতা কিছুতেই ছাড়তে চায়না। মনে হয় আর একটু থাকিনা বিছানার এই উষ্ণতায়। তিছুতেই যেনো এই ভালোবাসা ছাড়তে চায়না। তবুও কুয়াশার চাদর সরিয়ে উকি দেয় মিষ্টি রসের লোভ। বলছিলাম শীতের হীমজড়ানো ভোরে খেজুর রসের কথা। 

শীতের-সকালে-খেজুর-রসের-গুণাগুণ

গাছ থেকে সদ্য পাড়া এক গ্লাস টাটকা রসে যেনো জমে উঠে শীতের আমেজ যদি সাথে থাকে মুড়ি। শুধু কি তাই গাছিদের ব্যস্ততায় গল্পটাও রঙ বদলায়। চলুন তাহলে আজকে এই শীতের সকালের খেজুরের মিষ্টি রসের কাব্যকথা রচনা করি। 

সূচিপত্রঃ শীতের সকালে খেজুর রসের গুণাগুণ  

শীতের সকালে খেজুর রসের গুণাগুণ এই লিখনির মাঝে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ থেকে শুরু করে সকল কিছু নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। তাই বলা যায় আজকের এই পোস্ট বা লিখনিতে আবেগ, তথ্য, ভালোবাসা, অনুভূতি থেকে শুরু কেরে যাবতীয় ইনফরমেটিভ তথ্য গল্প আকারে শেয়ার করতে চলেছি। আশা করি শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে পড়বেন।

শীতের সময়ে খেজুর গাছের গল্পকথা 

মাথায় ঝাঁকা চুল শরীর জুড়ে ক্ষত চিহ্ন অথচ ভেতরটা মিষ্টি গল্পে ভরা। এই গাছ দেখলেই বোঝা যায় প্রতিটি বছর কি পরিমাণ ক্ষতের স্বীকার হতে এই গাছকে। বাসের তৈরি নালা দিয়ে যেই গল্পটা তা ফোটায় ফোটায় পড়ে আর সেইটা আবার জমা হয় মাটির হাঁড়িতে। মৌ মৌ গন্ধে ভিড় জমায় পিঁপড়া, ডানা মেলে উড়ে আসে দূর দূরান্ত থেকে পাখি, গুনগুন গানে জমা হয় মৌমাছি। 

শুধু কি তাই! কোয়াশা মাখা ভোরে খেজুর রসের ঘ্রানে মেলা বসে নানা বয়সের। এক গ্লাস টাটকা রসে জমে উঠে শীতের সকাল। অনেকেই তার সাথে শুকনো মুড়ি মিশিয়ে খয়ে যাচ্ছে মনের আনন্দেই। অথচ এই গাছটি শীতের হালকা মৃদু হাসিতে দৌলে দৌলে যেনো সেই সময়টাকে নিজেকে গর্বিত করে তোলে। এই খেজুর রস ছাড়া যেনো শীতের সকাল ভাবাটাও গল্পকথার রাজ্যের রূপকথার মতোই।

আরও পড়ুনঃ কিভাবে ঘরে বসেই মেয়েরা ইনকাম করবেন   

খেজুর গাছের পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য

এই খেজুর গাছ সাধারণত গ্রামে বেশি লক্ষ্য করা যায়। বাড়ির উঠনে, বন-জঙ্গলে, বিলের পাশে, নালার ধারে এইসব জায়গাগুলোতে বেশি দেখা যায় এই খেজুর গাছ। দেখেই বোঝা যায় কতোটা আনন্দে নিজেকে উৎস্বর্গ করেছে অন্যের তৃপ্তির জন্য। অনেক সময় দেখা যায় এর ঢেউ খেলানো বেড়ে উঠা আবার বাকা হয়ে কিছুটা গিয়ে তারপরে আবার সোজা হয়ে যাওয়া। বৈশিষ্ট্যগত ভাবেই এই গাছগুলো অনেক খাজ কাটার মতো। এই গাছে উঠাও অনেকটা সহজ হয় কারণ এই গাছ আকারে খুব একটা মোটা হয়না এবং সেই সাথে ধরার মতো অবস্থা থাকে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যেই গাছগুলো থেকে প্রতিবছর এইভাবে রস সংগ্রহ করা হয় ওই গাছগুলোতে কিছুদূর পরপর ক্ষত দেখা যায়। 

এর ডালগুলো চিরল চিরল পাতা দিয়ে ভরপুর থাকে। সেই সাথে এই গাছের বিভিন্ন ডালে অনেক পরিমাণে কাঁটাযুক্ত থাকে যা এই গাছের প্রধান বৈশিষ্ট্য। যেই পাতাও আমাদের বিভিন্ন সময় খেজুর পাতার পাটি বা মাদুর বানানোর কাজে আসে। অনেক ভাবেই এই গাছ আমাদেরকে সহযোগীতা করে থাকে। ছোট বেলায় যেই গাছের ডালকে সুন্দরভাবে ড্রাগনের মতো আকার দিয়ে ঠেলে নিয়ে বেড়ানো সেই সাথে বিভিন্ন ভাবে রং দিয়ে সজ্জায়িত করা। আসলেই এই খেজুর গাছ মানেই অনেক স্মৃতি অনেক আবেগ মিশিয়ে আছে এর সাথে। 

শীতের সকাল কেমন হয়ে থাকে যদি থাকে খেজুর রস   

একটা শীতের সকাল সবচাইতে সুন্দর ও ভালো ভাবে উপভোগ করতে চাইলে আপনাকে গ্রামে যেতে হবে। এর থেকে ভালো আর কোন উপায় থাকতেই পারেনা। কনকনে শীত, চারিদিকে কোয়াশার চাদরে অন্ধকার হয়ে থাকা অবস্থা সেই সাথে হালকা করে বাতাস মনে হবে আপনি কোন এক গল্প কথার রাজ্যে হারিয়ে গেছেন যেই রাজ্যে শুধু শীতের সকালকেই উপভোগ করার জন্য মহান আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। কত সুন্দর অপরূপ সৌন্দর্য ও অপার লীলাভূমিতে ভরপুর আমাদের এই দেশ।

বিছানার সাথে এতো আলিঙ্গন আর ভালোবাসা আপনাকে কোন ভাবেই যেনো ছাড়তে চাইবে না যেমনটা আপন মানুষকে ছেড়ে যাওয়ার মতোই একটা অনুভূতি। ভাবুন তো তাহলে কেমন হবে সেই সকালে যদি আপনি শিশির ভেজা সকালে শীতের চাঁদর বা পোষাক পরে বের হয়ে পড়েন খেজুরের রসের সন্ধানে! আমারতো ভাবতেই মনটা ভরে যাচ্ছে মনে হচ্ছে আমি সেই শিশির ভেজা ভোরে কোয়াশার চাদর ভেদ করে গল্পের রূপকথার রাজ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছি।

শীতের-সকাল-কেমন-হয়ে-থাকে-যদি-থাকে-খেজুর-রস.webp

খেজুর গাছের রস সংগ্রহের পূর্ব প্রস্তুতি

খেজুর গাছের রস সংগ্রহের প্রথম এবং কষ্টকর ধাপ হলো খেজুর গাছকে রস সংগ্রহের উপযোগী করে তোলা। একটি খেজুর গাছের মাথায় অনেক কাটাযুক্ত ডালপালা থাকে যা পরিষ্কার করে কিছু ডাল কেটে একেবারে মাথার কাছে রস বের করার যেই জায়গা সেইটা তৈরি করতে হয় গাছ কেটে। আর এই জায়গা তৈরি করাটাই প্রধান সমস্যা এবং কষ্টকর। এই জায়গা প্রস্তুত করা হলে ২ থেকে ৩ দিন সময় নিয়ে তারপরে গাছি এটাকে রস সংগ্রহের উপযোগী করে তোলার জন্য তার মাটির হাড়ি বা কলস নিয়ে প্রতিদিন বিকালে সেই খেজুর গাছে উঠা লাগে। 

বলে রাখা ভালো যারা প্রকৃত গাছি তারা এই কাজ করেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে যার জন্য তারা অনেকগুলো করে গাছ নিয়ে এই রস সংগ্রহের কাজগুলো করে থাকে। প্রতিদিন বিকাল হলেই গাছে উঠে সেই জায়গাটাই ভালো করে ধারালো কিছু দিয়ে উপরের শুকনা ছাল কেটে সেখানে বাসের বা টিনের একটি পাইপ সেট করা হয় যেখান দিয়ে রস গড়ে এসে ফোটায় ফোটায় হাড়িতে বা কলসে পড়বে। এইভাবে সকল গাছেই প্রতিদিন একই কাজ করা লাগে এবং ভোর বেলাই সেই রস আবার সংগ্রহ করা লাগে। এই ররসন জায়গাটা ভালো ভাবে তারা ঘেরাও করেও রাখে যেনো কোন কিছু পড়ে রসগুলো নষ্ট না হয়।  

শীতের সকালে গাছিদের ব্যস্ততা

শীতের সকাল মানেই গাছিদের নানা রকম কর্ম ব্যস্ততার আনাগুনা। বলে রাখা ভালো এই গাছি বলতে গ্রামাঞ্চলে যারা খেজুরের রস সংগ্রহ করে তাদেরকে বোঝায়। এই ভাষাটা হয়তো অঞ্চল বা এলাকাভেদে আলাদা হতে পারে। খুব ভোরেই এই গাছিগুলো তাদের উষ্ণ কাথার নিচে থেকে ওই দিনের সকল ভালোবাসার অবসান ঘটিয়ে বের হয়ে পড়েন তার কর্মযোজ্ঞে। বিভিন্ন গাছ থেকে সকল মাটির হাঁড়ি বা কলস সংগ্রহ করে নিয়ে আসে তার বাসায়। গাছ থেকে নামানোর সময়েই অনেক ক্রেতা সেই টাটকা রস খাওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়ে তাই সেই রকম প্রস্তুতি নিয়েই গাছিকে রস সংগ্রহ করতে যেতে হয় যেনো সেখানেই সেই রস বিক্রি করতে পারে। আবার দেখা যায় অনেকে তার বাসায় আগে থেকেই এসে বসে থাকে। 

সেই রস বিক্রি করা হলে বাকি রসগুলোকে উনুনের সাহায্যে জাল দেওয়া শুরু করে গুড় তৈরি করার জন্য। অনেক রস হওয়াই সব রস তো আর বিক্রি করা সম্ভব হয়না তাই অনেক গাছি এইভাবে প্রক্রিয়াকরণ করে বাজারে বিক্রি করে আবার অনেকেই সেই রস বাজারে বড় জার বা কলসে করে বিক্রি করে। আর এই ভাবেই কেটে যায় তাদের পুরো সকাল থেকে শুরু করে একটি বেলা। সেই বিকাল হলে আবারো তাদের আগের মতোই সেই রস সংগ্রহের পূর্বের প্রস্তুতিমূলক কাজে নেমে পড়ে তারা।  

মিষ্টি রস খাওয়া ও শীতের অনুভূতি

শীতের সকালে খেজুর রসের গুণাগুণ বিভিন্ন ভাবে পেয়ে থাকি। আমরা শীতের সময় অনেকেই আত্মীয়দের বাসায় বেড়াতে যায়। অনেকেই শহর থকে গ্রামে বেড়াতে আসে। তবে বেশিরভাগ সময়ই আমরা মামা বাড়িতেই কেউ বা বলি নানা বাড়ি আবার কেই বলি নানির বাড়িতে যায় শতিকালীন পারিবারিক উৎসবে অংশগ্রহণ করার জন্য। আর এই শীতকে ঘিরে কতকিছু আয়োজন করা হয় সেইখানে। বিশেষ করে রসের বিভিন্ন রকম পিঠা, পাইশ, ক্ষীর ইত্যাদি। বিভিন্ন রকম সুস্বাদু খাবারের গন্ধে ভরপুর হয়ে যায় পুরো বাড়ি সাথে তো ভাপা পিঠা থাকেই। আবার সেই ভাপা পিঠা খেতেও কিন্তু এই খেজুরের গুড়ের ব্যবহার থাকতেই হবে। 

সবকিছুর সাথে শীতের সকালে খেজুর রসতো থাকাই লাগবে। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে সেই খেজুর রস আর সেই সাথে নতুন প্যাকেট থেকে বের করা মচমচে মুড়ি খাওয়ার সেই রকম এক মজা। গ্লাসে করে রস নিয়ে সেই রসের মধ্যে মুড়ি ভিজিয়ে গ্লাসে চুমুকের সাথে মুড়ি চিবিয়ে খাওয়াটা যেনো শীতের আমেজের সবচেয়ে বড় অনুভূতি। আর অনুভূতি কখনোই শহরে বা অন্য কোথাও খুজে পাওয়া সম্ভব নয়। এই আসল মজাদার অনুভূতি কেবলমাত্র গ্রামেই পাওয়া সম্ভব। রস খেতে খেতে শরীরে কাপুনি শুরু হয় তবুও মনে হয় এই রস আরো খেতেই থাকি। 

তাইতো এইসকল সৌন্দর্য কবির গানের ভাষায় এই দেশের প্রকৃতি ও সৌন্দর্য তুলে ধরা হয়েছে সাথে অনেক কবিতাও লক্ষ্য করা যায়। তার মধ্যেকারই একটি অন্যতম একটি গানের দুইটি লাইন নিম্নে উল্লেখ না করে পারলাম না,

“ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা, আমাদেরি বসুন্ধরা, তাহার মাঝে আছে দেশ এক, সকল দেশের সেরা, ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা, এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি”

শীতের সকালে খেজুর রসের গুণাগুণ সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে আরো অনেক কিছুই আলোচনার মধ্যে চলে আসে। আসলেই কবির লিখাগুলো অনেক সুন্দর এবং সত্যিকারেই বাস্তবধর্মী। শুনলেই দেশপ্রেম নতুন করে জাগ্রত হয়ে এই মনে। 

আরও পড়ুনঃ ওজন কমানোর সর্বোত্তম কয়েকটি উপায়

খেজুরের রসের উপকারিতা

খেজুরের রসে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ রয়েছে যা শরীরকে অনেকটাই এনার্জী এনে দেয়। এক গ্লাস রস খেলেই এই এনার্জী সাথে সাথেই শরীরকে অনেকটাই সতেজ করে তোলে। এই খেজুরের রস এবং রস থেকে তৈরি গুড় বা লালি প্রতিদিন যদি অল্প করে খাওয়া যায় তাহলে শরীরে রক্ত স্বল্পতা দূর করে থাকে এই গুড়। আর এর প্রধান কারণ খেজুরের রস, গুড়ে ও লালিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ থাকে যা শরীরেররক্ত স্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে থাকে। 

খেজুরের রসের উপকারিতা অনেক জানলে হয়তো আপনি প্রতিদিন এক গ্লাস করে রস খাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিবেন এখন থেকেই। চলুন তাহলে এই খেজুরের রসের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসি।

  • রক্ত স্বল্পতা দূর করে
  • শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর করে
  • শরীরের এনার্জী তৈরি করে
  • পেশিকে মজবুত করে তোলে
  • হাড় মজবুত করে
  • দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • ভিটামিনের অভাব দূর করে 
  • ওজন কমানোর কাজে সহায়ক হিসেবে কাজ করে থাকে
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে
  • হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • পেটকে পরিপাক রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে

শীতের সকালে খেজুর রসের গুণাগুণ  কতটা আকুষ্ট করে সেইটা হয়তো রীতিমতো আপনি বুঝতে পরেছেন। খেজুর রসের স্বাদের কারণেই এমনিতেই সকলে আকৃষ্ট সেই সাথে এইসকল উপাদানগুলোর কারণে আরও বেশি বেশি এখন থেকে রস খাইতে চাইবেন। একবার ভাবুন তো, এই খেজুর রস কি শুধু স্বাদের জন্য কাজ করছে? না আসলে এই রস স্বাদের পাশাপাশি কতগুলো পুষ্টিকর উপাদান নিয়ে কাজ করে থাকে এবং আমাদের দেহের অনেকটাই ক্ষতিসাধন করে শরীরকে ভালো রাখতে সহযোগীতা করে। 

মিষ্টি-রস-খাওয়া-ও-শীতের-অনুভূতি.webp

খেজুরের রসের অপকারিতা

শীতের সকালে খেজুর রসের গুণাগুণ এর ফলে খেজুর রসের যেমন উপকারিতা রয়েছে তার বিভিন্ন গুণাবলির মাধ্যমে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। প্রত্যেকটা দিকেরই ভালো আর খারাপ দুইটা অংশ থাকে থাকে। যদি সঠিক ব্যবহার করা যায় তাহলে সেইটা খুবই উপকারি হিসেবে কাজ করে। আবার যদি সেইটাই কোন কারণে নিয়ম বহিঃর্ভূত করা হয় তাহলেই অমৃত থেকে বিষে রুপান্তরিত হয়ে যায়। ঠিক তেমনি এই খেজুর রসের ক্ষেত্রে তাই। এই খেজুর রসের সম্পর্কে ভালোভাবে না জেনে থাকলে তাহলে এইবার জেনে রাখুন-

  • ডায়াবেটিকস রোগীদের ক্ষেত্রে এই খেজুর রস ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
  • যাদের হাঁপানী এবং এ্যাজমা আছে তাদের ক্ষেত্রেও এই ঠান্ডা রস খাওয়া ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
  • এই খেজুর রস কিডনির সমস্যা আছে এমন রোগীদের জন্য না খাওয়াই ভালো।
  • অসুস্থ্য শরীরে এই খেজুর রস খেলে অনেকেই সহ্য করতে পারেনা তাই ওই অবস্থায় এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। 
  • অনেকক সময় বদ হজম বা গ্যাসের সৃষ্টি হতে পারে এই খেজুর রস থেকে।   

তাই এই সকল বিষয় মাথায় রেখে খেজুরের রস পান করাই শ্রেয়। শুধু উপকারের আশায় খেলে হবেনা দেখা লাগবে সেইটা আপনার শরীরে কতটুকু সহ্য করার ক্ষমতা আছে।

সাবধানতা অবলম্বন বা সতর্কতা

শীতের সকালে খেজুর রসের গুণাগুণ  অবশ্যই পাবেন তবে তার আগে এই বিষয়ে কিছু জেনে রাখা ভালো। খেজুরের রস আবেগের বসে বা স্বাদের নেশায় কখনোই খাবেন না। খাওয়ার আগে ভালো ভাবে নিজেকে যাচাই করে নিবেন এই রস খেয়ে আপনি কতটুকু ফিট থাকতে পারবেন। যদি আপনি এই রসের ভারসাম্য ধরে রাখতে না পারেন তাহলে আপনি অসুস্থ্য হয়ে পড়বেন। বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে এই খেজুর রস থেকে। চলুন কছু সতর্কতা সম্পর্কে অবগত হই।

  • খেজুর রসে কোন প্রকার পোকামাকড় পড়ছে কিনা সেই বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করবেন।
  • বাদুড় এই খেজুর রসের উপর বেশি আকৃষ্ট তাই সাবধানতার সহিত রস খেতে হবে তাছাড়া যে কোন সময় বাদুড়ের এটো করা রস খেলে নিপা ভাইরাস হতে পারে।
  • রস খুব সকালেই খেয়ে ফেলতে হবে এতে করে বাতাসে ভেসে বেড়ানো ছত্রাক বা ফাঙ্গাস রসের সাথে মিশতে পারেনা যা সূর্যের তাপ বাড়ার সাথে সাথে মিশে যেতে পারে রসের সাথে। 
  • অতিরিক্ত পান করলে পাতলা পাইখানা সহ পেটের বিভিন্ন রকমের সমস্যা হতে পারে।
  • এই রস অতিরিক্ত ঠান্ডা হওয়ার ফলে অনেক সময় পেট মোচড়ানো থেকে ডায়রিয়া পর্যন্ত হতে পারে।
  • অতিরিক্ত পান করার ফলে গ্যাসের সৃষ্টি হতে পারে। 
শীতের সকালে খেজুর রসের গুণাগুণ পাওয়ার জন্য আগ্রহ থাকলেও এইসব সমস্যার কথাশুনে হয়তো এখন আপনি ভাববেন যে রস খাওয়াই ছেড়ে দিবেন! আসলে সাবধানতা সকল কিছুর উর্ধ্বে। আপনি যদি সাবধানতা অবলম্বন না করেন তাহলে আপনাকে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই সমস্যায় পড়তে হবে শুধু এই খেজুরের রস খেলেই হবে এমনটা না। তাই প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই সতর্কতা রক্ষা করে চলতে হবে। 

উপদেশ এবং শেষ কথা

উপরোক্ত সকল বিষয় ও তথ্যের আলোকে আপনাকে এতটুকু বলতে পারি আপনি যদি একটু সতর্কতা অবলম্বন করে এই রস পান করেন তাহলে ইন-শা-আল্লাহ আপনার কোন প্রকার সমস্যা হবেনা। আর এই খেজুর রস যেহেতু সারা বছর পাওয়া যায়না কেবলমাত্র শীতের সময়টাই পাওয়া এরপরে আবার গাছের রস শুকিয়ে যায় তাই এই রস পান করারও প্রয়োজন আছে। এর অপকারের দিকটা খেয়াল রেখে উপকারের বিষয়টা ভাববেন তাহলেই কোন প্রকার সমস্যা দেখা দিবেনা। তবে ভালো ভাবে জেনে শুনে আপনার কোন পরিচিত মাধ্যমে দিয়ে গাছিদের রস খাবেন। 

শীতের সকালে খেজুর রসের গুণাগুণ সম্পর্কে  জানতে গিয়ে আমরা এর অনেক ভেতরের বিষয়বস্তু জানতে পেরেছি। আরো বলা যায় সব গাছিরাই যে ভালোভাবে যত্ন সহকারে এই রস সংগ্রহ করে এমনটি নাও হতে পারে তাই ভালো ভাবে জানা জরুরি। আপনার কোন ভুল সিদ্ধান্ত যেনো আপনার কোন ভোগান্তির কারণ হিসেবে না দাঁড়ায় সেই দিকটা অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। পরিশেষে বলতে চায়, আমার  এই লিখনির মাঝে কোন প্রকার ভুল তথ্য বা বানানগত সমস্যার কারণে বুঝতে বা পড়তে সমস্যা হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং গঠনমূলক আলোচনার দ্বারা সংশোধনের সুযোগ করে দিতে কমেন্ট এর মাধ্যমে জানালে উপকৃত থাকবো। সকলের সুস্বাস্থ্যে এবং মঙ্গল কামনা করছি, আসসালামু আলাইকুম। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ABM Creative IT'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url