অ্যালোভেরা গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা

অ্যালোভেরার আরেক নাম ঘৃতকুমারী। গ্রামাঞ্চলে এই গাছের বিভিন্ন রকম উপকারিতার কথা শোনা যায়। যদিও বিজ্ঞানসম্মত ও মেডিকেল মতামতও এই অ্যালোভেরাকে নিয়ে বিদ্যমান রয়েছে। এই গাছটির প্রাকৃতিক এমন কিছু গুণাগুণ আছে যার কারণে এই গাছটি অনেক প্রচলিত রয়েছে সকলের কাছে। 

অ্যালোভেরা-গাছের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা.webp

এই গাছটি এক সময় বিভিন্ন জায়গাতে এমনিতেই হইত। কিন্তু বর্তমানে আর সেই ভাবে কোথাও হতে দেখা যায় না। বরং এখন এই গাছটিকে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন জন বাসায় টবে, নার্সারিতে, জমিতে চাষ করে থাকে। বাণিজ্যিক ভাবেও এই গাছটি চাষ করা হয় প্রচুর চাহিদার কারণে। 

অ্যালোভেরার বিষয়বস্তু সমূহ- 

অ্যালোভেরা গাছের গুণাগুণ সম্পর্কে ধারণা

অ্যালোভেরা গাছ প্রাকৃতিক গুণাগুণে ভরপুর একটি ভেষজ উদ্ভিদ। যার বিচরণ ছোট ছোট জোয়গা থেকে শুরু করে অনেক বড় বড় সমস্যা সমাধানে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই গাছ সাধারণ বিভিন্ন জায়গাতে বিক্রি করতে দেখা যায় সেই সাথে েএই গাছের পাতাও বিক্রি কর েদেখা যায়। মানুষ তাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য যে যার মতো করে বাজার থেকে সংগ্রহ করে এবং সমস্যা অনুসারে ব্যবহার করে থাকে। 

এই গাছটির রস থেকে শুরু করে জেলি দুই ভাবেই খাওয়া যায়। অনেকে জুস বানিয়েও খেয়ে থাকে। এই গাছের পাতায় বেশি কাজে লাগে বলা যায় এই হাছের প্রধান ও মূল উপকরণই হলো পাতা। এই গাছের যত গুঞ্জন ও যত সুনাম সব কিছুই এই গাছের পাতা নিয়ে। যার সমস্যা অনুযায়ী ব্যবহারে প্রত্যেকটি সমস্যা ক্ষেত্রেই এই গাছের পাতার কার্যকারিতা ও ফলাফল খুব ভালো ভাবে কাজ করে থাকেন। 

আরও পড়ুনঃ কিভাবে ঘরে বসেই মেয়েরা ইনকাম করবে

অ্যালোভেরা গাছের বৈশিষ্ট্য ও আকার

এলোভেরা গাছ সাধারণত মূল থেকেই বের হওয়ার পরে চারিদিকে ছড়িয়ে লম্বা লম্বা আকৃতি হয়ে পাতা বের হয়ে থাকে। যার গোড়া মোটা এবং ডগা চিকন হয়ে থাকে। ক্রমান্বয়ে উপরের দিকে এই গাছের পাতা বের হতে থাকে। তবে এই গাছের পাতা ছাড়া অন্য কোন ডাল বা শাখা-প্রশাখা কিছু নেই। পাতার রঙ সবুজ এবং পাতার দুই পাশ দিয়ে কাটার মতো খাজ খাজ রয়েছে। নতুন গাছ জন্ম নিলে এই গাছের মূল শেকড় থেকে বের হয়ে নতুন নতুন গাছের সৃষ্টি হয় যা এক পর্যায়ে অনেকগুলা হয়ে যায় এবং মনে হবে এক জায়গাতে অনেকগুলা গাছ লাগানো আছে। এই গাছটির পাতা একটি রসালো উদ্ভিদ। 

এই গাছ লক্ষ্য করলে দেখা যাবে বিভিন্ন আকারের হয়ে থাকে। ছোট থেকে বড় সব রকমেরি আছে বা হয়। তবে এই গাছ সঠিক যত্ন পেলে এবং এই গাছের সঠিক পুষ্টি ঘাটতি পুরণ হলে এই গাছের আকুতি অনেক বড় বড় হয়ে থাকে। পাতা অনেক লম্বা ও মোটা পুর বিশিষ্ট হয়ে থাকে। সেই সাথে গাঁড়ো সবুজ আকার ধারণ করে। তবে এই গাছগুলো বড় করতে হলে খুব একটা বেশি সময় লাগে না, কয়েক মাসের মধ্যেই এই গাছ তার সঠিক আকৃতি লাভ করে থাকে। 

অ্যালোভেরা গাছের উপকারিতা সমূহ

এই অ্যালোভেরা গাছের উপকারিতা বলতে গেলে এর শেষ করা যাবেনা। আমরা যদি বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ ও বিভিন্ন গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারতাম তাহলে বোঝা সহজ হইত যে এইসব অর্গানিক চিকিৎসাগুলো কত ভালো কাজ করে থাকে এবং এদের উপকারিতা কি পরিমাণে আমাদের কাজে লাগে। চলুন তাহলে এই অ্যালোভেরা গাছের কিছু উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। 

  • চুলের পুষ্টি বজায় রাখতে অ্যালোভেরাঃ অ্যালোভেরার জেল অনেকেই চুল পড়া কমানোর জন্য, চুলের নমনীয়তা বজায় রাখতে, চুল কালো করতে, চুলের ফাটা দূর করতে, মাথার খুসকি দূর করে এবং চুল লম্বা ও সিল্কী করে তোলার জন্য ব্যবহার করে থাকে। শুধু তাই নয় মাথার জন্যেও ভালো কাজ করে থাকে অতিরিক্ত গম সিসা উঠাও রোধ করে এই অ্যালোভেরা। এই অ্যালোভেরা জেলে যেই পরিমাণে প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে তাতে করে চুলে বা মাথায় ব্যবহার করলে তাদের প্রয়োজনীয় সকল ভিটামিন এই অ্যালোভেরা থেকেই পেয়ে থাকে। যার ফলে চুলের গোড়া হয় আরো বজবুত ও চুলকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। 
  • ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরাঃ অ্যালোভেরার জেল তৈরি করে মুখে ব্যবহার করলে মুখের সকল টেম্পল, ক্ষত, ব্রণ, বিভিন্ন ধরনের দাগ সবকিছুিই দূর করে এই অ্যালোভেরার মধ্যে থাকা বিদ্যমান উপকরণ। যার ফলে মুখের সকল দাগ দূর করে ত্বকের সকল স্পট পরিষ্কার করে ফেলে সেই সাথে ত্বকের কালো দাগ বা আবরণকেও তুলে ফেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ভাব ফিরিয়ে আনে এবং ত্বক-কে করে তোলে আরো নরম ও কমল। ত্বকের আদ্রতা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয় এবং ত্বকের মশচারায়েজেশন ঠিক রাখে। সেই সাথে বয়সের ছাপ কমাতে অ্যালোভেরা শ্রেয়।
  • দ্রুত ক্ষত সেরে তুলতে অ্যালোভেরার ব্যবহারঃ এই অ্যালোভেরায় বিশেষ ধরনের এক উপকরণ থাকায় যে কোন ক্ষতকে দ্রুত সেরে উঠতে সহায়তা করে থাকে। সেই সাথে এই অ্যালোভেরা বিভিন্ন ধরনের ঘা ও পোড়াকে খুবই দ্রুত সেরে তুলতে সাহায্য করে এবং সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে থাকে। ত্বকের লাল ভাব ও চুলকানিসহ অন্যান্য সংক্রামক থেকে ত্বককে রক্ষা করে থাকে এবং ত্বককে আরো সুন্দর ও নমনীয় রাখতে বিশেষ ভাবে এই অ্যালোভেরা কাজ করে থাকে। সেই সাথে এই অ্যালোভেরা দাঁতের প্লাক কমায় এবং মাড়িকে আরো শক্ত ও বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া থেকে রক্ষা করে থাকে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা সমাধানে অ্যালোভেরাঃ অ্যালোভেরা শুধু যে ব্যবহার করে এর ফলাফর পাবেন শুধু তাই নয় এই অ্যালোভেরা জেল করে খালি মুখে অথবা খালি মুখে খেতে না পারলে কিছুটা মিষ্টি জাতীয়, যেমন- সন্দেশ মিশিয়ে যদি খালি পেটে নিয়মিত খাওয়া যায় তাহলে পেটের সকল সমস্যাকে দূর করে পেটকে সুস্থ্য রাখে সেই সাথে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকলে তা দূর করে দেয়। এই অ্যালোভেরা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং পায়খানাকে নরম করে যার ফলে কষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাকে দ্রুত দূর করে। 
  • অ্যালোভেরা একটি এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ব্যাকটেরিয়াবিরোধীঃ এই অ্যালোভেরা জেলে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা পলিফেনল নামে পরিচিত।  অ্যালোভেরা এমন একটি উপাদান যা দেহের শক্তিশালি এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ব্যাকটেরিয়াবিরোধী কাজ করে থাকে এবং দেহের এই গুণের ঘাটতি পূরণ করে থাকে। এই পলিফেনলগুলি অ্যালোভেরার অন্যান্য গুণাবলির সাথে মিলিত হয়ে নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটাতে ব্যহত করে থাকে সেই সাথে মানুষের দেহের মধ্যে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। এই অ্যালোভেরা ব্যকটেরিয়া, জীবাণুনাশক ও ভাইরাস প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে যার ফলে এটি আঘাত সেরে ওঠা এবং ত্বকের জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করে থাকে।  

অ্যালোভেরা গাছের অপকারিতা সমূহ

অ্যালোভেরা-গাছের-অপকারিতা-সমূহ.webp

সাধরণত অ্যালোভেরা গাছের তেমন কোন ক্ষতিকর দিক নেই বললেই চলে। প্রাকৃতিক উপদানে সর্বদাই ভালো উপাদনই থাকে। তবে ব্যবহারের তীব্রতা বা অবহেলা করা সেই সাথে বেখেয়ালি ভাবে এর ব্যবহারের ফলে অনেক সময় এর বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে তাই সেই বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে এতে করে এই কোন প্রকার ক্ষতির আশঙ্কা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। 

অ্যালোভেরা একটি প্রাকৃতিক ভেষজ উদ্ভিদ। যা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ক্ষেত্রে বহুল প্রচলিত ও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কথায় আছে কোন কিছুকেই ছোট করে দেখতে নেই। তেমনি কোন ঔষুধি গাছকে অবহেলা করা ঠিক নয়। প্রত্যেকটি উদ্ভিদেরই কোন না কোন গুণাবলি আছে। এই অ্যালোভেরাও তেমনি একটি গাছ যাকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করলে অনেক কাজেই আসবে আর ব্যবহার করতে না জানলে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি থাকে। 

অ্যালোভেরার সঠিক ব্যবহার বিধি

অ্যালোভেরার ব্যবহার বিধি নিয়ে তেমন কোন জটিলতা নেই। তবে কিছু নিয়ম অনুসারে এই অ্যালোভেরা ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা সঠিক ভাবে পালন করলে দ্রুত ফলাফল পাওয়া সম্ভব। সেই সাথে এই নিয়ম কার্যকরী ভূমিকা রাখতে গুরুত্বপূর্ণ  অবদান রাখে। অ্যালোভেরা যেহেতু শুধু পাতাই ব্যবহার করা হয় সেই দিক থেকে এই অ্যালোভেরা প্রধানত ০৩টি ভাবে ব্যবহার করা হয়- ১. খাওয়ার মাধ্যমে, ২. ব্যবহার বা ত্বকে প্রলেপ দিয়ে, ৩. রস করে সেবন।  

অ্যালোভেরা খাওয়ার উপায়ঃ অ্যালোভেরার পাতার মধ্যেকার জেলি বের করে খালি মুখেই কেউ চাইলে খেতে পারে আবার কেউ সন্দেশ বা চিনি ব্যবহার করেও খেতে পারে। মিষ্টি জাতীয় খাদ্য সামান্য পরিমাণে ব্যবহারের কারণ হলো অ্যালোভেরা সামান্য তেতো স্বাদযুক্ত যার কারণে সবাই হয়তো প্রথমবার খেতে সমস্যা অনুভব করবে। তবে খাওয়ার জন্য সন্দেশ ও অ্যালোভেরার জেলি মিশিয়ে ভালোভাবে জুস গাঁড়ো করে খেলেই বেশি ভালো কাজ করে থাকে। 

তবে এই মিশ্রণকৃত জেলি খাওয়ার মূখ্য সময় সকালে খালি পেটে। চাইলে অন্যান্য সময়েও আপনি খেতে পারেন সালাদ হিসেবেও কিন্তু সকালে খালি পেটে খেলেই এর আসল গুণাগুণ এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়। প্রতিদিন বড় পাতা হলে অর্ধেক এবং ছোট পাতা হলে পুরো একটা নিয়ে এইভাবে খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

অ্যালোভেরা ব্যবহারের উপায়ঃ যারা বিভিন্ন ক্ষত, ঘা, টেম্পল, দাগ, চুল বা মাথায় এইসব সমস্যার জন্য ব্যবহার করতে চান তারা অবশ্যই একই ভাবে পরিমাণ অনুযায়ী (আপনার যেই জায়গাতে ব্যবহার করবেন সেই জায়গাতে কভার করতে যতটুকু লাগবে) নিয়ে ভালো জেলা বানিয়ে আপনার সমস্যাকৃত জায়গা বা ত্বকে প্রলেপ আকারে ব্যবহার করুন। চুলের ক্ষেত্রে সকালে মাথায় দিয়ে তার ১ থেকে সর্বচ্চ ৩ ঘন্টা রেখে গোসল করার সময় ধুয়ে ফেলতে হবে। 

আর যদি মুখে ব্যবহার করেন তাহলে আমি বলবো রাত্রে ঘুমানোর পূর্বে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিয়ে মুখে প্রলেপ দিয়ে ঘুমিয়ে যাবেন সকালে ঘুম থেকে উঠে আবার ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন। এতে করে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এছাড়া আপনি অন্যান্য ক্ষত স্থানের জন্য যে কোন সময় ব্যবহার করতে পারেন তবে রাত এবং সকাল এই দুই সময়টাই বলা যায় অ্যালোভেরা ব্যবহারের মূখ্য সময়। 

রস করে অ্যালেভেরা সেবনঃ অ্যালোভেরা যাদের খাওয়ার প্রয়োজন হয় তারা সবাই অ্যালোভেরার জেলি তৈরি করে বা জুস তৈরি করে খেতে পারেন না। এইটা অতিরিক্ত গাড়ো হওয়ার কারণে সবাই খেতে পারেন না সেই ক্ষেত্রে এইটার রস বের করে খেয়ে থাকেন। আপনি চাইনে এই অ্যালোভেরার ভালোভাবে জেলি বানিয়ে সেইটা থেকে চিপে রস বের করে খেতে পারেন। যদি খেতে কোন সমস্যা হয় তাহলে মিষ্টি জাতীয় খাবার সামান্য পরিমাণে মিশিয়ে নিয়ে খাবেন। এইভাবেও ভালো কাজ ফলাফল পাওয়া সম্ভব। 

বিভিন্ন ব্যক্তি তাদের সুবিধামতো বিভিন্ন ভাবে এই অ্যালোভেরা ব্যবহার ও খেয়ে থাকেন। প্রধান বিষয় হচ্ছে আপনি যেই ভাবেই এর সুবিধা নিতে চান না কেনো শুধু সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে পরিমাণ মতো ব্যবহার করুন তাহলেই ইন-শা-আল্লাহ ভালো ফলাফল আশা করা যায়। 

মেডিকেল বিজ্ঞান কি বলে অ্যালোভেরা সম্পর্কে

অ্যালোভেরা এমন একটি উদ্ভিদ যাকে নিয়ে মেডিকেল সাইন্স ও বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষণ চালিয়েছে এবং তাতে করে সফলও হয়েছেন। তারা জানিয়েছেন এতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বিভিন্ন ভাবে কাজ করে থাকে। বিশেষ করে এই অ্যালোভেরা রক্তে শর্করাকে হ্রাস করে, রেচক হিসেবে কাজ করে, মেয়েদের স্তন ক্যান্সারের জন্য প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে, পেটের সমস্যা নিধন, মাউথওয়াশের বিকল্প হিসেবে কাজ করে থাকে। এই অ্যালোভেরার জেলে মূলত ভিটামিন, খনিজ, অ্যামিনো অ্যাসিড, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ উদ্ভিদের বেশিরভাগ বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ বিদ্যমান রয়েছে। এই বিষয়গুলোর সাথে মেডিকেল সাইন্স এর অনেকেই একমত পোষণ করেছেন। 

যেই বিষয়গুলো থেকে সাবধান থাকা প্রয়োজন 

শুধু অ্যালোভেরা নয়, যে কোন ঔষুধের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা খুবই জরুরী। হোক সেইটা এ্যালাপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি বা কোন ভেষজ আয়ুর্বেদিক ঔষুধ প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এতে করেই তাড়াতাড়ি আপনার কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া সম্ভব তাছাড়া সম্ভব নয় বরং দেখা যাবে উল্টোটা দেখা যাচ্ছে। ভালো করতে গিয়ে খারাপটাই ঘটছে আপনার সাথে। 

      • পরিমাণের বেশি ব্যবহার/খাবেন না।
      • অতিরিক্ত সময় ধরে ব্যবহার করবেন না।
      • অনেকের এলার্জী জাতীয় সমস্যা থাকতে পারে তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। 
      • পুরোনো জেলি কোন সময় ব্যবহার করবেন না। 
      • একটানা অনেকদিন ব্যবহার/খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। 
      • ভালোভাবে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিবেন। 
উল্লেখিত বিষয়গুলো লক্ষ্য রেখে এই অ্যালোভেরার ব্যবহার করলে অবশ্যই আপনি আপনার আশানুরূপ ফলাফল পেতে পারেন অন্যথায় হয়তো আপনার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। 

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার লক্ষণ সমূহ

অ্যালোভেরার ব্যবহারে অনিয়ম বা অসাবধানতার ফলে যেই সমস্যাগুলো হতে পারে তার নিম্নরুপঃ
    • ত্বকের ক্ষেত্রে অ্যালোভেরা ব্যবহারে অনেক সময় ত্বকে সুট না করলে ফুসকুড়ি, জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা হতে পারে।
    • অ্যালোভেরা খেলে অনেক সময় পেটের খিঁচুনিসহ আরো নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে সেই সাথে এলার্জীর মত সমস্যাও হতে পারে।
    • প্রসাবের রং অনেক সময় লাল বর্ণ হতে পারে এবং হেপাটাইটিস দেখা দিতে পারে। 
    • কোষ্ঠকাঠিন্যের অবনতি হতে পারে যার ফলে অতি পাতলা পায়খানা বা ঘন ঘন পায়খানাও হতে পারে। 
    • ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা ঘটতে পারে। 
উপরোক্ত সমস্যাগুলো দেখা দিলে তৎক্ষণাত অ্যালোভেরা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং সেই সাথে রেজিষ্টার্ড ডক্টরের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। তাছাড়া আপনার হয়তো আরো অবনতি হতে পারে যা অনেকটাই স্বাস্থ্য ও মৃত্যু ঝুঁকিও বৃদ্ধি করতে সক্ষম।
 

মন্তব্য বা শেষ কথা

পরিশেষ বলা যায় যে, অ্যালোভেরা যেহেতুেএকটি প্রাকৃতিক উপাদান এবং এটি একটি ভেষজ উদ্ভিদ সেই সাথে এর ব্যবহার আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার অর্ন্তভূক্ত তাই এই পন্থাকে গুরুত্বের সাথে নিবেন এবং কোন প্রকার অবহেলা করবেন না। ছোট কোন সমস্যা থেকেই আপনার যে কোন বড় ধরনের সমস্যা হতেও পারে তাই কোন প্রকার ঝুঁকি নিবেন না স্বাস্থ্যের বিষয়ে। যেহেতু এটি একটি অর্গানিক মাধ্যম তাই যে কোন সময় সমস্যা হতেও পারে। এছাড়া এখানে আর কোন সমস্যা নেই। আপনি যদি সঠিক ভাবে এর ব্যবহার করেন তাহলে অবশ্যই এর ভালো ফলাফল পাবেন। 

মানুষ বেইমান বা ধোকাবাজ হতে পারে কিন্তু ভেষজ উদ্ভিদ বা কোন গাছপালা বেইমান বা ধোকাবাজ হয়না। শুধু এদের ব্যবহারবিধি ঠিক রাখতে হবে সেই সাথে আপনার মনকেও ঠিক রাখতে হবে। এই রকম চিকিৎসা কেবল গ্রামেই বেশি লক্ষ্য করা যায়। আমি পোস্টদাতা হিসেবে এই পোস্টের পাঠককে অনুরোধ করবো এর সঠিক ব্যবহারের জন্য এবং সেই সাথে এই পোস্টের মধ্যে কোন ভুলত্রুটি হলে ক্ষমাসূলভ দৃষ্টিতে দেখবেন। এছাড়াও কোন পরিবর্তন বা পরিবর্ধন এর প্রয়োজন হলে অবশ্যই গঠন মূলক আলোচনা কমেন্ট এর মা্যেমে উপস্থাপন করবেন আশা করছি আমি সংশোধন করার চেষ্টা করবো ইন-শা-আল্লাহ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ABM Creative IT'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url